কোরআনে বর্ণিত পৃথিবীর প্রথম মানুষ, প্রথম পয়গম্বর বা নবী হযরত আদম (আঃ )। আল্লাহ আদম ( আঃ) পাঁজর থেকে তার স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করেছেন মানবজাতির মা হিসাবে ।
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা থেকে জানা যায়, আল্লাহতালা যখন ফেরেশতাদেরকে জানালেন যে, তিনি পৃথিবীতে তার প্রতিনিধি নিয়োগ করতে যাচ্ছেন তখন ফেরেশতারা বলল -
"আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরাই তো আপনার প্রশংসা সহ পবিত্রতা বর্ণনা করছি "
তখন আল্লাহ বলেন "নিঃসন্দে আমি যা জানি তোমরা তা জানো না "
আল্লাহ তাআলা আদম (আঃ ) কে মাটি থেকে সৃষ্টি করেন তারপর ইনার দেহে প্রাণ সঞ্চার করেন । হাওয়াকে সৃষ্টি করা হয় আদম ( আঃ ) এর পাঁজরের একটি হাড় থেকে ।সৃষ্টির পর তাদের আবাস হয় বেহেস্ত বা জান্নাত । আল্লাহ তাআলা ফেরেস্তা কুলকে আদেশ করেন আদম ( আঃ ) কে সিজদা করার জন্য কিন্তু ইবলিশ তাতে রাজি হয়নি ইবলিশ ব্যতীত সকল ফেরেশতা এই আদেশ পালন করেন কোরানে বলা হয়েছে
"আমি আদমকে পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি নিযুক্ত করিব "
( সূরা আল বাকারা, আয়াত ৩০ )
কোরান শরীফে উল্লেখ
কোরআন শরীফে আদম ( আঃ ) এর নাম ১০ টি সূরার ৫০ টি আয়তে উল্লেখ করা হয়েছে
১। সূরা আল বাকারা
২। সূরা আল ইমরান
৩। সূরা আল আরাফ
৪। সূরা ইশরা
৫। সূরা আল কাহফ
৬। সূরা ত্বোয়া-হা
৭। সূরা আল হিজর
৮। সূরা ছোয়াদ
৯। সূরা আল মায়িদাহ
১০। সূরা ইয়াসীন
আদম (আঃ ) এর নাম গুণাবলী ও কার্যাবলী আলোচনা করা হয়েছে
আদম (আঃ ) সৃষ্টি
আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করার জন্য আল্লাহপাক প্রথমে জিব্রাইল (আঃ) ও মিকাইল (আঃ) নামক দুই ফেরেশতাকে পাঠালেন তারা দুজনে মাটির দোহাই শুনে ফেরত গেল এরপর আল্লাহপাক আজরাইলকে (আঃ) পাঠালেন তিনি মাটির দোহাই অগ্রাহ্য করে পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে বিভিন্ন রঙের মাটি সংগ্রহ করলেন এবং আল্লাহর কাছে নিয়ে গেলেন আল্লাহপাক এই মাটি দিয়ে নিজ হাতে আদম (আঃ) আকৃতি দিলেন এবং রুহ ফুকে দিলেন আদম (আঃ) পেলেন জীবন
আদম (আঃ) কে সেজদা করার হুকুম
আল্লাহপাক আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করার পর ফেরেশতাদেরকে বললেন তোমরা আদমকে সিজদা করো আল্লাহর আদেশে সব ফেরেস্তা আদমকে সেজদা করলো কিন্তু শয়তান সেজদা করলো না । সে বলল আমি আগুনের তৈরি আর আদম মাটির তৈরি আল্লাহর আদেশ অমান্য করার আল্লাহপাক শয়তানকে বেহেশত থেকে বিতরণ করলেন আর আদম আলাই সালাম ও তার স্ত্রী হাওয়াকে জান্নাতে রাখলেন ।
আদম (আঃ) ও মা হাওয়াকে বেহেশত থেকে বিতাড়ন
সৃষ্টির পর আদম (আঃ) ও মা হাওয়ার অবস্থান ছিল বেহেস্তে সেখানে তাদের জন্য নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল ।শয়তানের প্ররোচনায় আদম (আঃ) ও মা হাওয়া উভয় নিষিদ্ধ ফল খেয়ে ফেললেন । আল্লাহতালা শাস্তি স্বরূপ তাদেরকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন ।আদম (আঃ) ও মা হাওয়া পৃথিবীর ভিন্ন দুটি স্থানে অবতরণ করেন আদম আঃ অবতরণ করেন সিংহলের আদম পাহাড়ে আর মা হাওয়া অবতরণ করেন সৌদি আরবে হেজাজে দীর্ঘদিন পর মক্কার আরাফাত নামক প্রান্তে তাদের পুন মিলন হয় ।
আদম (আঃ) এর পৃথিবীর জীবন
পৃথিবীতে আগমনের পর আদম (আঃ) ও মা হাওয়াকে আল্লাহর পক্ষ থেকে কাবাগৃহ নির্মাণের আদেশ প্রদান করা হয় । কাবা নির্মিত হয়ে গেলে তাদেরকে তাওয়াফ করার আদেশ দেওয়া হয় বর্ণিত আছে আদম কর্তৃক নির্মিত কাবা নূহের মহাপ্লাবন পর্যন্ত অক্ষত ছিল ।
আদম (আঃ) এর পরিবার
আদম (আঃ) এর স্ত্রী ছিলেন হাওয়া পৃথিবীতে আগমনের পর তাদের যে অনেকজন সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহণ করেছিল । আলোচিত সন্তান হলেন হাবিল, কাবিল ,আকলিমা লাইউদা ।তাদের সন্তান শিস (আঃ) আল্লাহর একজন নবী হয়েছিলেন
আদম (আঃ) এর ইন্তেকাল ও কবর
তিনি ৯৩০ বা ৯৫০ বা ১০০০ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন । ইনার ইন্তেকালের দিনটি ছিল শুক্রবার ।আদম আলাই সালামকে জাবালে কুবায়সে বা সিংহলের পাহাড়ে যেখানে প্রথম অবতরণ করেছিলেন বা বায়তুল মুকাদ্দাসে দাফন করা হয় ।
No comments:
Post a Comment